লক্ষ্মীপুরের গ্রিন লিফ ফিলিং স্টেশনে দুটি বাসে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। বিস্ফোরক অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসগুলোর সিলিন্ডারে জোড়া দেওয়ার আলামত পাওয়া গেছে, যা স্বাভাবিক গ্যাস সিলিন্ডারে থাকে না। এসব সিলিন্ডার বিশেষভাবে গ্যাসের জন্য তৈরি নয় এবং যানবাহনে ব্যবহারের উপযুক্ত ছিল না। ফলে বাসমালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
১১ ডিসেম্বর এবং ১৪ অক্টোবর দুটি আলাদা ঘটনায় গ্রিন লিফ ফিলিং স্টেশনে গ্যাস রিফিলের সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। প্রথম বিস্ফোরণে দুজন এবং দ্বিতীয়টি ঘটনার পর তিনজন নিহত হন। এর পর জেলা প্রশাসন পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যা ঘটনার বিস্তারিত অনুসন্ধান করবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লক্ষ্মীপুরে মানহীন এবং মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডারের ব্যবহার উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। সিলিন্ডারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এগুলো বিস্ফোরণের ঝুঁকি সৃষ্টি করে। বিস্ফোরক অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সিলিন্ডারের মেয়াদ ১০ থেকে ১৫ বছর এবং এই সময় পর সেগুলো নিরাপদ নয়। তবে লক্ষ্মীপুরে সিলিন্ডারের চাপ মাত্র ১০০-১৬০ পিএসআই থাকায়, এ ধরনের পুরোনো সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়েছে।
বিআরটিএ এবং বিস্ফোরক অধিদপ্তর নিয়মিত সিলিন্ডার পরীক্ষা এবং যানবাহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করেছে। বিআরটিএ জানায়, সিএনজি গ্যাস সিলিন্ডারগুলো নিয়মিত পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হয়, যাতে সেগুলি ব্যবহারের উপযোগী থাকে। এছাড়া, সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিকদের গ্যাস সরবরাহের আগে ফিটনেস সনদ চাওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার জানিয়েছেন, সিলিন্ডারের মেয়াদ পরীক্ষা নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত, পুলিশ ও বিআরটিএকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলো দুর্ঘটনা রোধে সাহায্য করবে এবং ভবিষ্যতে সিলিন্ডারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করা হবে।